মাতা ভুবনেশ্বরী মন্ত্র

মাতা ভুবনেশ্বরী হলেন দেবীর বিশেষ রুপ। হিন্দু হিন্দু শাস্ত্র ও পুরাণে ভুবনেশ্বরীর অনেক মন্ত্রের অবতারণা করা হয়েছে যেগুলো বিভিন্ন প্রয়োজনে ব‍্যবহার করা হয়। আজ আমরা এই লেখায় মাতা ভুবনেশ্বরীর সকল প্রকার মন্ত্র, সেই মন্ত্রের প্রয়োগ বিধি এবং গুরুত্ব সম্পর্কে আপনাদের জানাব যা আপনারা নিজেদের সঠিক প্রয়োজনে প্রয়োগ করলে ফল পাবেন। কিন্তু ভুবনেশ্বরী মন্ত্র জানবার আগে জেনে নেওয়া প্রয়োজন মাতা ভুবনেশ্বরী সম্পর্কে?

ভুবনেশ্বরী দেবী হলেন আদি পরাশক্তির সর্বোচ্চ রুপ, ব্রহ্মান্ড সৃষ্টির সঞ্চালিকা এবং ইনি দশ মহাবিদ্যা শ্রেণির চতুর্থ দেবী। শাস্ত্রে তার রুপ বর্ণিত হয়েছে যে তিনি দশমহাবিদ‍্যার প্রথম দেবী কালীর সঙ্গে অভিন্না। তাই তাকে বলা হয় রক্তকালী নামে। আবার মহাভাগবত পুরাণে তিনি দেবী দুর্গার তান্ত্রিক রুপে বর্ণিতা। তিনি এই সৃষ্টির স্রষ্টা। তাই তার আরেক নাম জগদ্ধাত্রী। ভুবনেশ্বরীর ভৈরব হলেন ত্র্যম্বক শিব।

ভুবনেশ্বরী মন্ত্র জপ করবার সবচেয়ে ভাল সময় হল ভোরবেলা ( বিশেষ করে ব্রহ্ম মুহূর্তে ) এবং সন্ধ্যা বেলা। আপনারা এই দুটি সময়ের মধ্যে যেকোন একটি সময়ে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে ভুবনেশ্বরীর ছবি বা যন্ত্রের সামনে কোন আসনের উপর বসবেন। সঙ্গে একটি ঘিয়ের প্রদীপ এবং ধূপ প্রজ্জ্বলিত করবেন যদি সম্ভব হয় তাহলে ফুল এবং আপনার সাধ‍্যমত ভোগ নিবেদন করবেন। মন্ত্র জপ শুরু করবার আগে আপনাকে ভগবান শিব এবং মাতা ভুবনেশ্বরীকে ভক্তি ভরে প্রনাম জানিয়ে তারপর মন্ত্র জপকরা শুরু করবেন। প্রতিদিন অন্তত পক্ষে ১০৮ বার মন্ত্র জপ করতে হবে।

মাতা ভুবনেশ্বরীর অনেক মন্ত্রের উল্লেখ রয়েছে আমাদের শাস্ত্রে। বলা হয় যখন কোন মন্ত্র জপ করে কোন লাভ হয় না তখন ভুবনেশ্বরী মন্ত্র জপ করলে ভক্ত দ্রুত তার অভীষ্ট লক্ষে পৌছাতে পারবে। ভুবনেশ্বরী মন্ত্র জপ করলে ভক্ত যে সমস্ত ফল পেতে পারেন তাহল :

ক) এই ভুবনেশ্বরী মন্ত্র জপ করলে শত্রুবাধা দূর হয়।
খ) ভক্ত দীর্ঘ দিনের দরিদ্রতাকে সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারে। ভক্ত সকল প্রকার সম্পদ অর্জন করতে পারে এবং সকল পার্থিব সুখ ভোগ করতে পারে।
গ) আপনি বা আপনার পরিবারের কোন সদস্য যদি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকে তাহলে ভুবনেশ্বরী মন্ত্র সাধনায় খুব তাড়াতাড়ি আপনি সুরাহা পেতে পারেন।
ঘ) যে গৃহে ভুবনেশ্বরী মন্ত্র নিয়মিত জপ হয় সেই গৃহে কোন প্রকার নেতিবাচক শক্তি বিরাজ করে না।
ঙ) গৃহ কলহ দূর করে পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা বজিয়ে রাখতে এই দেবীর মন্ত্র অত্যন্ত উপযোগী।
চ) এই মন্ত্র গুলো জপ করে ভক্ত জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং আধ‍্যাত্মিক সাফল্য লাভ করতে পারে খুব তাড়াতাড়ি।
ছ) ভক্তের জীবন থেকে সকল প্রকার সমস্যা অতি সহজেই দূর হয়ে ভক্তের সকল মনোস্কামনা পূরণ হয়।

১)ভুবনেশ্বরী ধ‍্যান মন্ত্র :

বালরবিদ্যুতিম্ ইন্দুকিরীটাম্, তুঙ্গকুচাম্, নয়ন-ত্রয়যুক্তাম্,
স্মেরমুখীং, বরদাঙ্কুশ পাশভীতিকরাম্ প্রভজে ভুবনেশীম্।”

২)ভুবনেশ্বরী প্রণাম মন্ত্র :

ভুবনেশীং মহামায়ীং সূর্য্যমণ্ডলরূপিণীম্।
নমামিংবরদাং শুদ্ধাং কামাখ্যারূপনীং শিবাং।।

৩)একাক্ষরী ভুবনেশ্বরী বীজ মন্ত্র :

হ্রীঁ

৪)ভুবনেশ্বরী বীজ মন্ত্র :

ক.ওঁ আইঁ হ্রীঁ শ্রীঁ ক্লীঁ সৌঁ।
খ.ওঁ শাং মাতা ভূবনেশ্বরী।
গ.ওঁ হ্রীং ভূবনেশ্বয‍্যৈ নমঃ ।

৫)কার্যসিদ্ধি ভুবনেশ্বরী মন্ত্র :

ওঁ হ্রীঁ শ্রীঁ ক্লীঁ ভুবনেশ্বার্যৈ নমঃ ॥

৬)ভুবনেশ্বরী গায়ত্রী মন্ত্র :

ওঁ ভুবনেশ্বার্যৈ বিদমহে
কামাক্ষ্যাই ধীমাহি
তন্নো দেবী প্রচোদয়াত ॥

৭)অষ্টাক্ষরী ভুবনেশ্বরী মন্ত্র :

আঁ শ্রীঁ হ্রীঁ ক্লীঁ ক্লীঁ হ্রীঁ শ্রীঁ ক্রৌঁ।

৮)ত্রয়োক্ষরী ভুবনেশ্বরী মন্ত্র :

আঁ হ্রীঁ ক্রৌঁ।

৯) এক বীজাক্ষর যুক্ত ভুবনেশ্বরী মন্ত্র :

হ্রীঁ ভুবনেশ্বার্যৈ নমঃ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *